জমজম কূপ পৃথিবীতে সপ্ত আশ্চর্যজনক সৃষ্টির মধ্যে একটি । জমজমের পানি স্বাস্থ্যের জন্য উৎকৃষ্ট টনিক স্বরূপ


 পৃথিবীতে যত আশ্চর্যজনক সৃষ্টি রয়েছে জমজম কূপ তার অন্যতম । এর পানি কখনো নিঃশেষ হয় না । যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় খাদ্য ও পুষ্টি গবেষণা পায়  জমজমের পানি স্বাস্থ্যের জন্য উৎকৃষ্ট টনিক স্বরূপ । মক্কায় মসজিদুল হারামের অভ্যন্তরে ঐতিহাসিক কাবা থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে অবস্থিত ।



জমজম কূপের সৃষ্টির ইতিহাস ঃ

ইসলামী বর্ণনা অনুযায়ী নবী ইব্রাহিম (আঃ) , তার স্ত্রী হাজেরা  (আঃ) ও তার শিশুপুত্র ইসমাইল  (আঃ) কে মরুভূমি রেখে আসার পর জিব্রাইল  (আঃ) এর পায়ের আঘাতে সৃষ্টি হয় এই  কূপ । প্রথম থেকেই জমজম কূপ বালি ও পাথর দিয়ে ঘেরা অবস্থায় থাকলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন খলিফার সময় এটি বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হয় । সর্বশেষ ২০১৭ থেকে ১৮ সালে সৌদি বাদশা এর সংস্কারন করেন । বর্তমানে কূপটি কাবা চত্বরে আর দেখা যায় না । এটি ভূগর্ভস্থ অবস্থায় রাখা হয়েছে । এখান থেকে পাম্পের সাহায্যে প্রতিদিন ২০ লক্ষাধিক ব্যারেল পানি উত্তোলন করা হয় । 


বিশ্বের কুটি কুটি ইসলাম ধর্মাবলি মানুষ জমজমের পানি কে অত্যন্ত পবিত্র এবং অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন বলে মনে করেন । সৌদি আরবের জমজম স্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারিজ ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে সাধারণ পানির তুলনায় জমজমের পানিতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সল্ট এর পরিমাণ বেশি । যা মানুষের খাদ্য পুষ্টি ও রোগ নিরাময় কারী হিসেবে কাজ করে । জমজমের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত মাত্রা চেয়ে অনেক কম । 



সৌদি ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার অধীনে জমজম স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার  এই কূপের পানির মান, গভীরতা্‌ অমৃরিতার মাত্রা এবং তাপমাত্রার দিকে নিয়মিত নজর রাখে । পানিতে কোন রকম দূষণ ঘটেছে কি না তা পরীক্ষা ও গবেষণার জন্য প্রতিদিন এই পনির তিনটি নমুনা সংগ্রহ করা হয় । জমজমের পানি বিতরনের জন্য মক্কায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উন্নত সুবিধায় আব্দুল্লাহ জমজম পানি বিতরণ কেন্দ্র  । এখান থেকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী গভীর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এই পানিকে বোতলজাতক করা হয় ।


এই পানির বিতরণ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ট্যাংকারে করে অন্ততো ১২০ টন জমজমের পানি মদিনার মসজিদ নববী সৌদি আরবের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয় । পরিবহনের সময় সে পানি যেন কোন রকম ভাবে দূষিত না হয় সেদিকে রাখা হয় বিশেষ নজরদারি । ইসলামের বিধান অনুযায়ী পানি বসে পান করতে বলা হলেও জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করার বিধান রয়েছে। 


মসজিদুল হারামে আগত লোকেরা জমজমের পানি পান করার পাশাপাশি প্রিয়জনের জন্য তা নিয়েও যেতে পারেন  । তবে জমজমের পানি অবৈধভাবে বিক্রি বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তা দেশের বাইরে রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে সৌদি সরকার ।


Post a Comment

1 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.