পৃথিবীর প্রাকৃতিক সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম একটি হলো ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত । Victory Falls Zimbabwe#Zimbia | বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সুন্দর ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত |

                                             Video Link:  https://youtu.be/EjHJ5ASYySk




 পৃথিবীর প্রাকৃতিক সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম একটি হলো ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত ।  রহস্য ঘন  আফ্রিকা মহাদেশের দুটি দেশ জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের সীমানায় অবস্থিত এ জলপ্রপাত যা কিনা পৃথিবীর বৃহত্তম জলপ্রপাত । এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন জলপ্রপাত এর মধ্যে একটি হিসেবে গণ্য করা হয় । প্রকৃতির এক অনুপম বিস্ময় ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত এর তুলনা পৃথিবীর আর কিছুর সাথে হয়না । জিম্বাবুয়ে ও জাম্বিয়ার সীমাভর্তি যৌথ নদী জাম্বেজি থেকে  এ জলপ্রপাতের উৎপত্তি হয়েছে । অবাক করা বিষয় হলো প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১০ লক্ষ লিটার পানি এ  জলপ্রপাত থেকে পতিত হয়, যা সত্যিই বিস্ময়কর । এ জলপপাত থেকে পানি পড়ার সময় প্রচন্ড আওয়াজ হয় বলে আগে  স্থানীয়রা এখানে আসতে ভয় পেত এবং তারা এর নাম দেয় মোসি-ওয়া-টুনিয়া তার অর্থ বজ্রের ধোয়া । আজকের পর্বে জানাবো পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম জলপ্রপাত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত সম্পর্কে  । তাই পুরো ভিডিওটি দেখার অনুরোধ করছি । 


ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত এর অবস্থান প্রকৃতপক্ষে জাম্বিয়াতে । কিন্তু এটি জিম্বাবুয়ের সীমানা ছুঁয়ে আছড়ে পড়েছে নিচের দিকে । তাই এর আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে যেতে হবে জিম্বাবুয়ের ভিক্টোরিয়া সিটি প্রান্তে । ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম জলপ্রপাত ।  উচ্চতায় ১০৮ মিটার হলেও চোওরায়  জলপ্রপাত প্রায় ১৭০৮ মিটার ।  আর পৃথিবীর চওড়া এই জলপ্রপাত থেকে গড়ে প্রতি সেকেন্ডে ১০ লক্ষ লিটার পানি নিচে আছড়ে পড়ে আর তাতে জন্ম নিচ্ছে এক নিপুণ সৌন্দর্যের আধার । 


ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত এর শব্দ ৪০ কিলোমিটার দূর থেকে শোনা যায় এবং এ জলপ্রপাত দিয়ে পানি পড়ার সময় জলীয়বাষ্পের মেঘ তৈরি হয় যা প্রায় ৪০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত পৌছে যায় যা ৫০ কিলোমিটার দূর থেকে দেখা যায় । এ কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা এই জলপ্রপাতকে মোসি-ওয়া-টুনিয়া বা ধোঁয়াশায়ি গর্জন বলে ডাকে । ব্রিটিশ  অভিযাত্রী ডেভিড লিভিংস্টোন ১৮৫৫ সালে এ জলপ্রপাত দেখে এর নামকরণ করেন রানী ভিক্টোরিয়ার নামে । সে থেকে এটি ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত নামে পরিচিত ।  ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এ জল-প্রপাতের পুনরায় নামকরণ করেন মোসি-ওয়া-টুনিয়া ।


জাম্বেজি নদীর পানি ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত এর প্রধান উৎস ।  নায়াগ্রা জলপ্রপাত এর সাথে তুলনা করলে ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত প্রায় দ্বিগুণ প্রশস্ত ও দ্বিগুণ গভীর । ইউনুস্কো ১৯৮৯ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে জলপ্রপাতটিকে তালিকা করেন । এ জলপপাত তার অধিক উচ্চতার কারণে বিশ্বের প্রাকৃতিক সপ্ত আচার্য এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে । ১৯৮০ সালে জিম্বাবোয়ে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে মূলত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত দেখতে দলে দলে মানুষ আসতে থাকে , বিশেষ করে বিদেশী পর্যটকরা বেশি আকৃষ্ট হন । তবে ইউরোপের মানুষ এখানে বেশী আসেন ।


জলপ্রপাত দেখতে আসা দর্শনার্থীরা প্রায়  সবাই দেখতে আসেন জাম্বিয়ার ব্রিজ । জাম্বিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন এই ব্রিজ দিয়ে যাওয়া যায় জাম্বিয়াতে ।  ব্রিজটির অনেক উঁচুতে অবস্থিত হওয়ার কারণে নিচে তাকালে দেখা যায় কত প্রবল বেগে বইছে পানির স্রোত । জলপ্রপাতের উভয় অংশকে সংযুক্ত করতে ভিক্টোরিয়া ফলস সেতু নির্মাণ করা হয়েছে ।  এর মাধ্যমে রেলগাড়ি ও মোটর গাড়ি চলাচল করে ।  বর্তমানে এটি পর্যটক এর কাছে প্রধান আকর্ষণ ।  জিম্বাবুয়ের অংশ থেকে ৭৫ ভাগ এবং জাম্বিয়ার অংশ থেকে ২৫ ভাগ অংশ দেখা যায়  । ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত প্রায় বছর জুড়েই বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে ।  সাদা মেঘগুলো কুণ্ডলী পাকিয়ে ঘুরতে থাকে জলপ্রপাতের সামনে । ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত যেকোনো সময় ভ্রমণ কর যায় ।


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.