ছেলেবেলা থেকে আমাদের অনেকেরই পৃথিবীর শেষ প্রান্তে যেতে ইচ্ছে করে । কিন্তু আমাদের গ্রহটা যেহেতু গোলাকার তাই শেষ প্রান্ত বলে আসলে কিছু নেই । তবে নরওয়েতে একটি পাহাড় চূড়া আছে যেখানে গেলে মনে হবে আপনি হয়তো পৃথিবীর শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন। এই জায়গার নাম পাইকে স্টোলেন । আজ আমরা জেনে নিব পাইকে স্টোলেন সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় জানা-অজানা তথ্য ।
পাইকে স্টোলেন নামে জায়গাটি নরওয়ের রাইফেল কি জেলার ফোর সেন্ট অঞ্চলে অবস্থিত । ইংরেজিতে এই জায়গাকে বলা হয় পালপিট রক । পাইকে স্টোলেন একটি দীর্ঘ সরু সামুদ্রিক খাড়ির পাশে অবস্থিত । ধারণা করা হয় প্রায় ১০ হাজার বছর আগে বরফ যুগের সুবিশাল হিমু বায়ুর প্রভাবে জায়গাটি এমন আকৃতি লাভ করেছে । অতীতে পেগান ধর্মের লোকেরা এখানে উপাসনা করতো ।
১৯০০ সালের সর্বপ্রথম এই জায়গায় পর্যটন ব্যবস্থা চালু হয় । ২০০০ ফুট উঁচুতে থাকা পাহাড়চূড়া প্রায় ৮২ বর্গ ফুট প্রশস্ত । এখানে পৌঁছাতে পায়ে হেঁটে প্রায়.৪ কিলোমিটার পাহাড়ের পথ পাড়ি দিতে হয় ।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখতে এখানে কোন পরিবেষ্টনী দেওয়া হয়নি । এরফলে দর্শনার্থীরা ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে । শীতকালে এখানে সেতো শুভ্র প্রকৃতি দেখে মনেই হবেনা এটি আমাদের গ্রহের কোন জায়গা ।
বিখ্যাত ট্রাভেল গাইড Loney planet মতে পাইকে স্টোলেন পৃথিবীর সবচেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর ভিউ পয়েন্ট ।
এমনিতেই নরওয়ের বাতাস পৃথিবীর সবচেয়ে বিশুদ্ধ বাতাস গুলোর মধ্যে অন্যতম । তারমধ্যে পালপিট এলাকার বাতাস বিশুদ্ধতম । সেজন্য এখানকার বাতাস বোতল জাত করে বিক্রয় করা হয় । এখানকার ৮ লিটার বাতাসের দাম প্রায় বাংলাদেশের পনেরশো টাকা ।
দুঃসাহসী পর্যটকেরা নানা রকম কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এখানকার রোমাঞ্চ আরো বাড়িয়ে নিতে পারে । বেজ জাম্পিং, উইনিং সুট , পোয়াকিং ,ফ্রী হ্যাংগিং, এর মতো নানান ধরনের অ্যাকশন শ্যুট বেশ জনপ্রিয় । সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক পব কালচারের মাধ্যমে বিশেষ এই প্রাকৃতিক জায়গাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । প্রতিবছর প্রায় তিন লক্ষের বেশি লোক পাইকে স্টোলেন বেড়াতে আসেন । নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে জায়গাটি নরওয়ের অন্যতম বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে । শুধু পাইকে স্টোলেন নয় নরওয়ে সহ স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলটি ছবির মতো সুন্দর ।