প্রশান্ত মহাসাগর |পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মহাসাগর |Fact about Pacific Ocean in Bengali | Pacific Ocean

                                                     

                                 Video Link :   https://youtu.be/KI3kiouZmY0  


 ভূপৃষ্ঠের চারভাগের তিনভাগ বা শতকরা পঁচাত্তর ভাগই পানি । এর মধ্যে সুপ্রিয় পানি ধারক এবং বাহক হিসাবে রয়েছে অসংখ্য খাল-বিল এবং নদী-নালা ।বিস্ময়কর ব্যাপার হলো পৃথিবীতে বিদ্যমান মোট পানির সংখ্যার শতকরা ৩ ভাগ এইসব জলাশয়ে সঞ্চিত রয়েছে । পাখি ৯৭% লবণাক্ত পানি হিসেবে বিভিন্ন সাগর ও মহাসাগর বিদ্যমান । এই মহাসাগর গুলোর মধ্যে আটলান্টিক , প্রশান্ত এবং ভারত মহাসাগরের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । বিস্তীর্ণ জলরাশি গুলো থেকে সৃষ্ট মৌসুমী বাতাস সুপ্রাচীন কাল থেকেই মানব সভ্যতার সম্প্রসারণ এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আছে । এই মহাসাগর গুলোর মধ্যে আয়তনে প্রশান্ত মহাসাগর সবচেয়ে বড় । এই তথ্যটি অনেকেরই জানা রয়েছে ।  কিন্তু জানেন কি ? প্রশান্ত মহাসাগর আয়তনে ভূপৃষ্ঠের মোট স্থলভাগের চাইতে ও বড় । প্রশান্ত মহাসাগর সম্পর্কে আপনাদের এমন চমকপ্রদ এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাবো এই ভিডিও তে ।


বিশ্বের বৃহত্তম জলধারা প্রশান্ত মহাসাগরের আয়তন প্রায় ১৭ কোটি বর্গ কিলোমিটার প্রায় সাড়ে ৬ কোটি বর্গমাইল । পৃথিবীর সব স্থলভাগের আয়তন যোগ করলে দাঁড়াবে ১৫ কোটি বর্গমাইল অর্থাৎ পৃথিবীর স্থলভাগের পুরোটাই প্রশান্ত মহাসাগরে ডুবে দেওয়া যাবে । পৃথিবীর মোট ভূপৃষ্ঠের শতকরা ৪৬ ভাগ বা প্রায় অর্ধেকই এই প্রশান্ত মহাসাগরের অন্তর্ভুক্ত । পূবে আমেরিকা এবং পশ্চিমে এশিয়া মহাদেশের মধ্যবর্তী পুরোটাই এই মহাসাগরের অংশ। ৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ বরাবর এই মহাসাগর এর বিস্তৃতি সবচেয়ে বেশি। ইন্দোনেশিয়া থেকে শুরু করে কলম্বিয়ার উপর পর্যন্ত এলাকার দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার অর্থাৎ এর মধ্যে পাঁচটা চাপকে অনায়াসে ডুবিয়ে নিতে পারে । 


একইভাবে উত্তর আটলান্টিক সাগর থেকে শুরু করে দক্ষিণ এন্টারটিকা পর্যন্ত পুরোটাই প্রশান্ত মহাসাগরের অংশ । সব মিলিয়ে এই প্রশান্ত মহাসাগরে পানির পরিমাণ প্রায় সারে ৭১  কুটি ঘনমিটার বা ১৭ কোটি ঘন মাইল । এই পানির তাপমাত্রা মেরুর কাছে - ১ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস শুরু করে বিষুবরেখার এলাকার সর্বোচ্চ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে । তাপমাত্রা মত প্রশান্ত মহাসাগরে পানি লবণাক্ত এলাকা ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে  । প্রাগ ঐতিহাসিক সময় থেকে মানুষ প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে এসেছে । ধারণা করা হয় কমপক্ষে ৪৫ হাজার বছর আগে প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অংশ পেরিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়াই পদার্পণ করেছে ছিল মানুষ । খ্রিস্টপূর্ব ৩ হাজার নাগাদ তাইওয়ানের অধিবাসীরা এই মহাসাগরে পাড়ি দিয়ে ফিলিপাযার, ইন্দোনেশিয়া এবং মাদাগাস্কার প্রতিবেশীদের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য নজির রয়েছে ।


ধীরে ধীরে সামুদ্রিক বাণিজ্য পথ আফ্রিকার মোজাম্বিক থেকে জাপান পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে ।প্রশান্ত মহাসাগর নাম রেখেছেন পর্তুগালের অভিযাত্রী ফারডী নাল মেজীণাল ।প্রশান্ত মহাসাগরের গড় গভীরতা প্রায় ৪000 মিটার বা ৪ কিলোমিটার । বিশ্বের এই জলাশয়ে ঘিরে রয়েছে অর্ধ-শতাধিক স্বাধীন এবং সার্বভৌমত্ব দেশ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু দেশ হচ্ছে আর্জেন্টিনা ,অস্ট্রেলিয়্‌ , কানাডা , ইন্দোনেশিয়া্‌ জাপান ,মালয়েশিয়া  ,মেক্সিকো , নিউজিল্যান্ড , রাশিয়া , সিঙ্গাপুর , থাইল্যান্ড  ,ভিয়েতনাম  এবং যুক্তরাষ্ট্র । এছাড়া চীন এবং তাইওয়ানের দখলে মহাসাগরে কিছু অংশ রয়েছে  । শুধু তাই না এই মহাসাগরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে 2000 এর বেশি দ্বীপ । পৃথিবীর আর কোন জলাশয় এত সংখ্যক দ্বীপের অবস্থান নেই  । এই দ্বীপ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় দ্বীপ হল নিউগিনি ।


নাম প্রশান্ত মহাসাগর হলেও ঘূর্ণিঝড় , অগ্নুৎপাত , ভূমিকম্প  ,হারিকেন  , সুনামির মতো অসংখ্য বিপদজনক প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্ম দেওয়া এই মহাসাগর এর জুড়ি মেলা ভার । পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগরের জীব-বৈচিত্র পরিমাণ বিশ্বের সর্বোচ্চ ।  অর্থাৎ বিশ্বের সর্বোচ্চ সংখ্যক সামুদ্রিক জীব এই প্রশান্ত মহাসাগরে বসবাস করে  । এর মধ্যে রয়েছে বাহারি সব প্রজাতির স্কুইড এবং অক্টোপাস  । যার মধ্যে গভীর সমুদ্রে বসবাসকারী জাশ স্কুইড  কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । আরো আছে নানা প্রজাতির তিমি , হাঙ্গর ,হাঙ্গর , টুনান , সাড়ীণ মতো অসংখ্য প্রজাতির  সামুদ্রিক মাছ ।


চমকে ওঠার মতো তথ্য হচ্ছে সারা বিশ্বে যত মাছ শিকার করা হচ্ছে তার প্রায় ৭০ ভাগই এই প্রশান্ত মহাসাগর থেকে সংগ্রহ করা হয়।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.